স্বাভাবিক কার্যাবলী সম্পাদন ব্যতীত ও দুর্যোগ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তর নিম্মবর্ণিত দায়িত্ব পালন করে থাকে-

স্বাভাবিক সময়ে:

  • অধিদপ্তরে একজন দূর্যোগ্য ফোকাল পয়েন্ট মনোনীত করিবে এবং তাহা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরোসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিবে;
  • অধিদপ্তরাধীন সংশ্লিষ্ট সকল ফিল্ড অফিসারগণ যাহাতে প্রতি বছর বন্যা মওসুম শুরুর পূর্বেই মৎস্য চাষক্ষেত্র, রাসায়নিক দ্রব্যাদি, সাজ-সরঞ্জাম, জলযান এবং স্থল পরিবহণযানসহ দপ্তরের নিজস্ব সম্পদসমূহের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তাহা নিশ্চিত করিবে;
  • ফিশিং লাইসেন্স প্রদানের পূর্বে প্রতিটি ট্রলারে ওয়ারলেস ও রেডিও সেট এবং মাছ ধরার নৌকাসমূহে মেরিন ফিসারিজ অফিসের রেজিষ্ট্রেশন আছে কিনা তাহা যাচাই করিবে;
  • বঙ্গোপসাগরে মৎস্য শিকাররত সকল মাছ ধরার নৌকা/ট্রলারে রেডিও রিসিভিং সেট ও উক্ত যানে উপস্থিত প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য লাইফ জ্যাকেট, বয়া রাখা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে উপযুক্ত আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে;
  • ঘূর্ণিঝড়/জলোচ্ছাসপ্রবণ এলাকাসমূহের সরকারি ও বেসরকারি মৎস্য সম্পদসমূহের একটি তালিকা প্রণয়ন ও সংরক্ষণ করিবে এবং সুনির্দিষ্ট সময় পর পর উক্ত সংকলন হালনাগাদ করিবে;
  • ঘূর্ণিঝড় এলাকাসমূহের মৎস্যজীবী জনসংখ্যার জরীপ করিবে ও জরীপের থানা-ভিত্তিক উপযুক্ত সংকলন প্রণয়ন করিবে। নির্দিষ্ট সময় পর পর উক্ত সংকলন হালনাগাদ করিবে;
  • উদ্ধারকারী জাহাজ হিসাবে ব্যবহারের উপযোগি সমুদ্রগামী মাছ ধরার জাহাজসমূহের একটি তালিকা (তাহাদের মালিক/ চালকের ঠিকানাসহ) প্রণয়ন ও সংরক্ষণ করবে;
  • বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর সহিত আলোচনাক্রমে যাহাতে চিংড়ি চাষ এলাকার সরকারী বাঁধ ও সুইচসমূহ সামুদ্রিক জলোচ্ছাসের ফলে লবণাক্ত পানির প্রবেশ রোধ করিবার মত উচুঁ ও যথেষ্ট শক্তিশালী হয় তাহা নিশ্চিত করিবে;
  • উপকূলীয় পুকুরসমূহ হইতে লবণাক্ত পানি বাহির করিয়া দেওয়ার কাজে শক্তিচালিত পাম্পের লভ্যতা সম্পর্কে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এর সহিত সমন্বয় করিবে;
  • মাঠ পর্যায়ের অফিসার, ষ্টাফ এবং মৎস্যজীবী সম্প্রদায়কে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা প্রস্ত্ততি, পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি এবং পূনর্বাসন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ এবং পরিচিতির ব্যবস্থা করিবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণকে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করিবে।

  দুর্যোগ সময়ে মৎস্য অধিদপ্তরের করণীয়:

  • বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহিত আলোচনাক্রমে এই ব্যাপারে নিশ্চিত হইবে যে বাঁধাসমূহের সুইচ গেটসমূহ উপযুক্তভাবে তৈরি ও সংরক্ষিত, যাহা লবণাক্ত পানি প্রবেশ ও নির্গমণ এবং উহা যথেষ্ট শক্তিশালী যাহা প্রবল জলোচ্ছাসের ফলে সৃষ্ট স্রোতের ধাক্কা সহ্য ও লবণাক্ত পানি প্রবেশ রোধ করিতে সক্ষম;
  • মৎস্য সম্পদ খাতে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপনের জন্য অবিলম্বে জরীপ কার্যের ব্যবস্থা করিবে এবং মৎস্য সম্পদের সরকারি ও বেসরকারি খাতের জন্য অবিলম্বে দীর্ঘ মেয়াদী ক্রাণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে;
  • উদ্ধার অভিযানের জন্য সমুদ্রগামী জাহাজ রিকুইজিশন করার ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করিবে;
  • অধিদপ্তরে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ পরিচালনা করিবে এবং স্থানীয় সমন্বয় কমিটিতে যোগাযোগ কর্মকর্তা প্রেরণ করিবে।

  পুনর্বাসন পর্যায়ে মৎস্য অধিদপ্তরের করণীয়ঃ

  • সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুর হইতে লবণাক্ত পানি পাম্প করিয়া বাহির করিবার জন্য পাওয়ার পাম্পের লভ্যতা বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এর সহিত সমন্বয় সাধন করিবে( ঘূর্ণিঝড় দূর্যোগের ক্ষেত্রে);
  • সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন উভয়ক্ষেত্রে মৎস্য সম্পদ খাতে অবিলম্বে দীর্ঘ মেয়াদী ত্রাণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করিবে;
  • ক্ষতিগ্রস্থ পুকুর ও খামার পুনঃ মৎস্য উপযোগী করিবার জন্য বেসরকারি মৎস্যচাষিদের কারিগরী পরামর্শ প্রদান করিবে;
  • ত্রাণ ও পুনর্বাসন স্থানীয় প্রশাসনকে সকল সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদান করিবে;
  • ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবী ও মৎস্যচাষিদের জন্য ঋণ সহায়তা এবং অনুদানের ব্যবস্থা করিবার কর্মসূচি গ্রহণ করিবে;
  • ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর মালিকদেরকে মৎস্য পোনা সরবরাহ এবং মৎস্যচাষে কারিগরি পরামর্শ প্রদান করিবে।

 
  তথ্যসূত্র: DoF

Answer for দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় মৎস্য অধিদপ্তরের ভূমিকা কি?