মাগুর মাছের শ্রেণীবিন্যাস (Classification)
                     Phylum – Chordata
                            Class- Osteichthyes
                                Order- Siluriformes
                                       Family- Claridae
                                         Genus- Clarias
                                              Species- C. batrachus
 
স্থানীয় নাম: মাগুর
ইংরেজী নাম: Walking catfish
 
বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য
মাগুর অাঁইশবিহীন জিওল মাছ। দেহ লালচে বাদামি বা ধূসর কালো। এদের মাথা বেশ চ্যাপ্টা ও মুখ প্রশস্ত। পৃষ্ঠ (Dorsal fin) ও পায়ূ পাখনা (Pelvic fin) লম্বা এবং লেজের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। লেজের অংশ চাপা ও গোলাকৃতি। মুখে চার জোড়া গোঁফ (Barbel) আছে। পিঠের দুই পার্শ্বে দুটো অতিরিক্ত শ্বসনযন্ত্র (Accessory respiratory organ) রয়েছে, যার ফলে এরা দীর্ঘক্ষণ পানি ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সীমিত আকারে সফলভাবে দেশী মাগুর মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষ হচ্ছে।
 
আবাসস্থল
খাল, বিল, প্লাবনভূমি, হাওর-বাঁওড়, পুকুর দিঘী, ডোবা- নালা এবং নিমজ্জিত ধান ক্ষেত মাগুর মাছের প্রধান আবাসস্থল। এরা কাঁদাযুক্ত পানিতে এমনকি কর্দমাক্ত তলার মাটিতে্, গর্তে, নিমজ্জিত গাছের গুড়ির তলায় বা সুড়ঙ্গে বসবাস করতে পছন্দ করে। স্রোতহীন আবদ্ধ পানিতে এবং আগাছা, নল- খাগড়া ও কচুরিপানায়, পঁচা ডাল-পালা যুক্ত জলাশয়ে বসবাস করতে পছন্দ করে।
 
খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাস
মাগুর মাছ সাধারণত সর্বভূক (Omnivorous) এবং জলাশয়ের তলার খাদ্য খেয়ে থাকে। এরা জীবন চক্রের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের খাদ্য খেয়ে থাকে। এদের খাদ্যাভ্যাস অনেকটা শিং মাছের মতই। যেমন-

  • রেণু পর্যায়ঃ আর্টেমিয়া এবং জু-প্ল্যাংকটন, ক্ষুদ্র জলজ পোকা-মাকড় ইত্যাদি।
  • জুভেনাইল পর্যায়ঃ জুপ্ল্যাংকটন ও ক্ষুদ্র জলজ পোকা, টিউবিফিসিড ওয়ার্ম।
  • বয়োপ্রাপ্ত অবস্থায়ঃ জলজ পোকা-মাকড়, বেনথোস, টিউবিফিসিড ওয়ার্ম, ক্ষুদ্র চিংড়ি ও   মাছ, ডেট্রিটাস, পচনরত প্রাণিজ দ্রব্যাদি।

 
পরিপক্কতা ও প্রজনন
মাগুর মাছ এক বছরের মধ্যেই পরিপক্কতা লাভ করে এবং বছরে একবার প্রজনন করে থাকে। এরা সাধারণত ২০-৩০ সেমি. পর্যন্ত লম্বা হয়। একই বয়সের স্ত্রী মাগুর মাছ পুরুষ মাগুর মাছের তুলনায় কিছুটা আকারে বড় হয়। এরা প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রজনন সম্পন্ন করে। তবে বর্তমানে সফলভাবে প্রণোদিত প্রজননের মাধ্যমে সীমিত পর্যায়ে পোনা উৎপাদিত হচ্ছে। এদের প্রজননকাল মে মাস থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত। তবে জুন-জুলাই মাসে সর্বোচ্চ প্রজনন কাল হিসেবে বিবেচিত। প্রজননের সময়ে নুতন পানি আসার সাথে সাথেই এরা মাইগ্রেট করে নিকটবর্তী ধানক্ষেত, প্লাবনভূমিতে আসে এবং সেখানে মাটিতে গোলাকার গর্ত করে তাতে ডিম ছাড়ে। মাগুর মাছের ডিম ধারণ ক্ষমতা দৈহিক ওজনের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। সাধারণত ৮০ থেকে ১০০ গ্রাম ওজনের মাগুর মাছের ডিম ধারণ ক্ষমতা ৭,০০০-১০,০০০ টি। মাগুরের পরিপক্ক ডিম হালকা সবুজ থেকে তামাটে বর্ণের হয়ে থাকে। নিষিক্ত ডিম আঠালো এবং গাছের ডাল-পালা ও আগাছায় লেগে থাকে।
 
তথ্যসূত্র: DoF, Bangladesh

Answer for মাগুর মাছের জীববিজ্ঞান জানতে চাই?