মাছচাষের বর্ষপঞ্জী নিচে দেয়া হল –
বৈশাখঃ কার্প, কৈ, শিং মাগুর বা দেশী প্রজাতির মাছের রেণু ছাড়ার উত্তম সময় বৈশাখ মাস। চৈত্রের শুরুতেই রেণু পোনার পুকুর পরিচর্যা করা হলে বৈশাখে ছাড়া রেণু পোনা এক মাসের মধ্যে ভাল মানের চারা পোনায় পরিনত হতে পারে এবং ভাল বাজার পাওয়া যাবে। একই সাথে চারা পোনা উৎপাদনের পুকুর এ মাসেই তৈরি করতে হয়।
জৈষ্ঠঃ বৈশাখ মাসে আতুর পুকুরে ছাড়া রেণু জৈষ্ঠে চারা পোনায় পরিনত হয়। বৈশাখে তৈরি চারা পোনার পুকুরে এ মাসে পোনা মজুদ করতে হবে। পোনা ছাড়ার আগে পুকুরে ঘন ফাঁসের জাল টেনে আগাছ এবং জলজ উদ্ভিদ পরিস্কার করতে হবে।
আষাঢ়ঃ আষাঢ়ের ঢলে পুকুর তলিয়ে যেতে পারে বা পাড় ভেঙে পড়তে পারে। এজন্য পুকুরের পাড় মজবুত করে বাঁধতে হবে। প্রয়োজনে বাঁশের খুটি পুতে পাড় রোধ করতে হবে। সম্ভব হলে পাইপের সাহায্যে পানি অপসারণ করতে হবে।
শ্রাবনঃ এ সময় জৈষ্ঠর ছাড়া পোনা বিক্রয় যোগ্য হয়। এ সময় কিছু মাছ বিক্রি করে দিলে বাকি মাছ দ্রুত বড় হবার সুযোগ পায়।
ভাদ্রঃ এ মাসে পুকুরে অতিরিক্ত পরিচর্যার প্রয়োজন। এ মাসে দ্বিতীয় দফায় পোনা ছাড়ার উত্তম সময়। তবে নতুন পোনা ছাড়া না হলে পুরোনো পোনার ঘনত্ব কমিয়ে দিতে হবে।
আশ্বিন-কার্তিকঃ এ দু’মাসে পুকুরে মাছের জন্য প্রাকৃতিক খাবারে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এ সময় মাছের জন্য প্রাকৃতিক খাবার তৈরি করতে হবে। এ জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। এ সময়ে মাছের ঘা-সহ নানা রোগের প্রাথমিক প্রতিষেধক ব্যবহার করতে হবে। অগ্রহায়নঃ এ সময়ে হালকা শীত পড়তে শুরু করে। এজন্য মাছের খাদ্য গ্রহন অনেকটা কমে যায়। পুকুরে এ্যামোনিয়ার প্রভাব বৃদ্ধি পায় তাই নিয়মিতহ মৎস্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।
পৌষ-মাঘঃ সময়টা শীতকাল, মাছ চাষীদের ক্রান্তিকাল। শীতের কারণে মাছের খাদ্য গ্রহন কমে যায়। পানিতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। এ সময়ে কৃত্তিম উপায়ে পানিতে অক্সিজেনের বৃদ্ধি ঘটাতে হবে। জাল টেনে, হঢ়রা টেনে এবং বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে পানিতে অক্সিজেনের বৃদ্ধি ঘটানো যায়।
ফাল্গুন-চৈত্রঃ ফাল্গুনে গরম পড়ার সাথে সাথে মাছের খাদ্যাভাস বেড়ে যায়। তবে পুকুরে যাতে করে অতিরিক্ত খাবার প্রয়োগ করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ সময় পুকুরে মাছের পোনা ছাড়ার পক্রিয়া করতে হবে। যেমন ভাত তরকারীতে নুন তেমন মাছ চাষে চুন। মাছ চাষে সফলতা অর্জনের জন্য আদর্শ পুকুর তৈরি, সময় বুঝে পোনা ছাড়া এবং মাছ ধরা, খাদ্য প্রয়োগ, পানি পরীক্ষা করে রোগ নাশক প্রয়োগ করা, পানি পরিস্কার রাখার জন্য নিয়মিত চুন প্রয়োগ করা অপরিহার্য।
তথ্যসুত্রঃ বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তর
Answer for মাছচাষের বর্ষপঞ্জী জানতে চাই