স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক পরিবেশে মাছ যেভাবে প্রজনন করে থাকে তাকে স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক প্রজনন (natural breeding) বলা হয়।
অন্যদিকে কৃত্রিম পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনায় মাছকে যেভাবে প্রজনন করানো হয়ে থাকে তাকে কৃত্রিম প্রজনন বা আর্টিফিশিয়াল ব্রিডিং (artificial breeding) বলা হয়ে থাকে। সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে কৃত্রিম প্রজনন করানো হয়ে থাকে। যথা-
- প্রণোদিত (induced) পদ্ধতি / প্রজনন
- স্ট্রিপিং (striping) পদ্ধতি
প্রণোদিত (induced) পদ্ধতি:
প্রণোদিত প্রজননের ক্ষেত্রে মা-বাবা মাছকে কৃত্রিমভাবে হ্যাচারিতে প্রাকৃতিক পরিবেশের কাছাকাছি পরিবেশ সৃষ্টি করে সেখানে রাখা হয় এবং একইসাথে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয় (তবে অনেক সময় অনেক প্রজাতির ক্ষেত্রে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগের প্রয়োজন নাও হতে পারে।)। হ্যাচারিতে সৃষ্ট কৃত্রিম পরিবেশই মা-বাবা মাছ নিজেরাই স্বতস্ফুর্তভাবে প্রজনন করে থাকে এবং বাবার শুক্রাণুর মাধ্যমে মায়ের ছাড়া ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়ে থাকে। এরপর সাধারণত নিষিক্ত ডিম ইনকিউবেটরের রেখে পরিস্ফুটনের ব্যবস্থা করা হয়।
স্ট্রিপিং (striping) পদ্ধতি:
অন্যদিকে স্ট্রিপিং পদ্ধতিতে মা-বাবা মাছকে কৃত্রিমভাবে হ্যাচারিতে প্রাকৃতিক পরিবেশের কাছাকাছি পরিবেশ সৃষ্টি করে সেখানে রাখা হয় এবং একইসাথে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয় (তবে অনেক সময় অনেক প্রজাতির ক্ষেত্রে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগের প্রয়োজন নাও হতে পারে।)। তবে এক্ষেত্রে হ্যাচারিতে সৃষ্ট কৃত্রিম পরিবেশই মা-বাবা মাছ নিজেরা স্বতস্ফুর্তভাবে প্রজনন করে না । বরং এর পরিবর্তে একটা নির্দিষ্ট সময় পর প্রথমে মা মাছের উদরে চাপ প্রয়োগ করে ডিম্বাণু বের করে একটি পাত্রে রাখা হয়। এরপর চাপ প্রয়োগ করে বাবা মাছের শুক্রাণু বের করে অন্য একটি পাত্রে রাখা হয়। অতঃপর একটি পাত্রে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুকে মিশ্রিত করার মাধ্যমে নিষেক সম্পন্ন করানো হয়। নিষিক্ত ডিমকে ইনকিউবেটরে রেখে পরিস্ফুটনের ব্যবস্থা করা হয়।
তাই বলা যেতে পারে সকল প্রণোদিত প্রজনন (induced breeding) কৃত্রিম প্রজনন (artificial breeding) কিন্তু সকল কৃত্রিম প্রজনন প্রণোদিত প্রজনন নয়।