মাটি বলতে ভূপৃষ্ঠের উপরিতলের নরম খনিজ এবং জৈব উপাদানের মিশ্রণ যা উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। পুকুরের মাটি প্রধানতঃ ৪ টি প্রধান উপাদান সমন্বয়ে গঠিত। এগুলো হল
- খনিজ পদার্থ – ৪৫%;
- জৈব পদার্থ – ৫%;
- বায়ু – ২৫ %;
- পানি – ২৫%;
সুতরাং মাটি কঠিন, তরল এবং গ্যাসীয় এই তিন ধরণের পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। নিচে মাটির বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলোঃ
খনিজ পদার্থ
ভূ-ত্বক প্রথমে শিলা দ্বারা গঠিত ছিল। পরে তা শিলা ক্ষয় প্রক্রিয়ায় ভেঙ্গে ছোট খন্ডে বা এককে রূপান্তরিত হয়। মাটির এই অংশ বালি, পলি ও কর্দম কণা দ্বারা গঠিত। শিলা ক্ষয় প্রক্রিয়ার ফলে উপরোক্ত কণা ও অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যোপাদান যেমন- নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান মাটিতে মুক্ত হয়। মাটিতে খনিজের পরিমাণ হলো ৪৫%।
জৈব পদার্থ
মাটিতে ১-২% জৈব পদার্থ থাকে তবে হিম অঞ্চলের মাটি ২-৫% জৈব পদার্থ ধারণ করে। এই সব জৈব পদার্থ উদ্ভিদ ও প্রাণীর অবশিষ্টাংশ ও মলমূত্র হতে মাটিতে আসে। জৈব পদার্থ মাটির আবদ্ধকরণ পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ খুব কম হলেও এটি ব্যাপকভাবে মাটির গুণাবলী নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
জৈব পদার্থ নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে-
- সমস্ত পুষ্টি উপাদানের গুদাম ঘর হিসেবে কাজ করে;
- মাটির ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব গুণাবলী উন্নত করে;
- ভূমি ক্ষয় রোধ করে;
- অতিরিক্ত শ্বসন অঙ্গ থাকায় এসব মাছ বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে; ফলে জীবন্ত অবস্থায় বাজারজাত করা যায়;
- পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে;
- অণুজীবের প্রধান শক্তি হলো এই জৈব পদার্থ এবং
- মাটিতে নাইট্রোজেনের প্রধান উৎস এ জৈব পদার্থ।
বায়ু ও পানি
প্রবল বর্ষার সময় বা সেচ দিলে মাটির অধিকাংশ রন্ধ্রই পানি দ্বারা পূর্ণ হয়। কিন্তু শুকনা বা খরার সময় ঐ রন্ধ্রগুলো বায়ু দ্বারা পূর্ণ হয়। বায়ুমন্ডলের বায়ু অপেক্ষা মাটির বায়ুতে বেশি পরিমাণ কার্বন ডাই-আক্সাইড ও জলীয়বাষ্প থাকে কিন্তু অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকে। বায়ুর প্রধান কাজ হলো শ্বসন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা। বায়ু ও পানির গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো-
- মাটির ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক কার্য নিয়ন্ত্রণ করা;
- শিলা ক্ষয় প্রক্রিয়ায় সাহায্য করা;
- সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করা এবং
- দ্রাবক ও পুষ্টি উপাদানের বাহক হিসেবে কাজ করা।
তথ্যসূত্র: DoF