ফসফরাস
প্রাকৃতিক পানিতে অতি অল্প পরিমাণ ফসফরাস থাকে। এই ফসফরাস ফসফেটে রূপান্তরিত হয়। পরিমিত ফসফেটের উপস্থিতিতে প্রচুর পরিমাণ উদ্ভিদ-প্লাঙ্কটন জন্মায়। জলজ উৎপাদনে ফসফরাস এককভাবে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জৈব পদার্থের আধিক্যই ফসফরাসের সরবরাহ বাড়ায়। পুকুরের পানিতে ০.২ মি.গ্রা./লিটার ফসফরাস থাকা প্রয়োজন।
নাইট্রোজেন
নাইট্রোজেন জলজ উদ্ভিদের মৌল পুষ্টি উপাদান। আমিষ সংশ্লেষণের উপকরণের হিসেবে নাইট্রোজেন জলজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে। প্রকৃতি প্রদত্ত নাইট্রোজেন কোন জলাশয়ের নাইট্রোজেনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম নয়। পানিতে ০.২ মি.গ্রা./লিটার নাইট্রোজেন মাত্রা মাছ চাষের জন্য খুবই উপযোগী।জিপসাম প্রয়োগ করে মোট পানির ক্ষারত্ব বাড়ানো যায় এমপি সার প্রয়োগ করে পানিতে ফসফরাসের পরিমাণ কিছুটা বাড়ানো যায়;
ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে পানিতে নাইট্রোজেনের অভাব দূর করা যায়।
অ্যামোনিয়া
এটি একটি নাইট্রোজেনজাত বিষাক্ত গ্যাস। এ গ্যাসের উপস্থিতিতে মাছ ও চিংড়ির স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পানিতে অ্যামোনিয়ার বেশি মাত্রার উপস্থিতিতে সমস্ত মাছ ও চিংড়ি মারা যেতে পারে। অ্যামোনিয়া পানিতে দু’ভাবে থাকতে পারে- আয়নিত অ্যামোনিয়া (NH4+) ও অনায়নিত অ্যামোনিয়া (NH3)। অনায়নিত অ্যামোনিয়া আয়নিত অ্যামোনিয়ার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর। অনায়নিত অ্যামোনিয়া মাছ ও চিংড়ির জন্যে বিষাক্ত। তাই পানিতে এর মাত্রা ০.০২৫ মি.গ্রা./লিটারের বেশি হওয়া উচিত নয় এবং ০.১ মিগ্রা/লিটার অতিক্রম করা বিপদজনক।
মাছের বর্জ্য, অভুক্ত খাদ্য, বিভিন্ন নাইট্রোজেনজাত পদার্থ, মৃত শ্যাওলা পঁচনের ফলে পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া দূষিত পদার্থের দ্বারা পুকুরের পানিতে অ্যামোনিয়া চলে আসতে পারে। তাপমাত্রা এবং পিএইচ মাত্রা বেশি থাকলে পানিতে অনায়নিত অ্যামোনিয়া বেড়ে যায়। সাধারণতঃ সন্ধ্যার দিকে যখন কার্বন ডাই-অক্সাইড কম থাকে এবং পিএইচ মাত্রা বেশি থাকে, তখনই পানিতে অনায়নিত অ্যামোনিয়া বেড়ে যায়।
পুকুরে অ্যামোনিয়া বাড়লে মাছ ও চিংড়ির রক্ত এবং পেশীতে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে মাছ ও চিংড়ির দেহের পিএইচের মাত্রা কমে যায় ও বৃদ্ধি হ্রাস পায়। এ অবস্থায় মাছ ও চিংড়ি খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে দেয় এবং অস্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে থাকে।
অতিরিক্ত মজুদ ঘনত্ব পরিহার করে সঠিক ঘনত্বে মাছ মজুদ এবং সার ও খাদ্য প্রয়োগ নিয়ন্ত্রণ করে অ্যামোনিয়া দূষণ প্রতিরোধ করা যায়।
হাইড্রোজেন সালফাইড
এ গ্যাসের ০.০১-০.০৫ মিলিগ্রাম/লিটার ঘনত্বে জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটতে পারে। পানিতে এই গ্যাসের পরিমাণ ০.০০২ মিলিগ্রাম/লিটার এর বেশি থাকা কোনভাবেই নিরাপদ নয়। পানিতে হাইড্রোজেন সালফাইডের উপস্থিতি না থাকাই উত্তম।
তথ্যসূত্র: DoF
ফসফরাস, নাইট্রোজেন, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইড ইত্যাদি রাসায়নিক কিভাবে মাছচাষকে প্রভাবিত করে?
1 Answers
Answer for ফসফরাস, নাইট্রোজেন, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইড ইত্যাদি রাসায়নিক কিভাবে মাছচাষকে প্রভাবিত করে?