প্রাণিজ আমিষের মধ্যে মৎস্য-আমিষই উত্তম। এ আমিষ সহজপাচ্য এবং মাছের হাড় ও কাঁটা নরম হওয়ায় সহজেই হজম হয়ে শরীর গঠনে ও রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা করে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ প্রোটিন ও পুষ্টি সমস্যায় ভুগছে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে প্রতি বছর ৩০ হাজারের অধিক শিশু রাতকানা রোগে আক্রান্ত হয়। গ্রামীণ মানুষের শতকরা ৫৭ ভাগ প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে, ৮৯ ভাগ আয়রনের অভাবে, ৮০ ভাগ ক্যালসিয়ামের অভাবে এবং ৫৩ ভাগ রক্ত শুন্যতায় ভুগছে। বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায় যে, মানবদেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদাসহ ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের অভাব পূরণে ছোট মাছের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশীয় ছোট প্রজাতির মাছ বিশেষ করে মলা, ঢেলা, কৈ, শিং ও মাগুর মাছ চোখের জন্য খুবই উপকারী এবং রক্ত স্বল্পতা রোধে সহায়তা করে।
পুষ্টিমান বিবেচনায় কৈ, শিং ও মাগুর মাছের পুষ্টিগুণ বড় মাছের তুলনায় অনেক বেশি। এসকল মাছে প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্ট প্রচুর পরিমাণ রয়েছে। পুষ্টিগুণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য শিং মাছে আছে প্রোটিন- ২২.৮০ গ্রাম, স্নেহ- ০.৬০ গ্রাম, আয়রণ- ০.৮০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ০.৬৭ গ্রাম এবং ফসফরাস রয়েছে -০.৬৫ গ্রাম। মাগুর মাছের ক্ষেত্রে প্রোটিন- ৩২ গ্রাম, স্নেহ- ২.০০ গ্রাম, লোহা- ০.৭০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ০.১৭২ গ্রাম এবং ফসফরাস- ০.৩০ গ্রাম রয়েছে। কৈ মাছে অধিক পরিমাণে ভিটামিন এ, খনিজ পদার্থ, যেমন- আয়রণ ও কপার রয়েছে। যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে অত্যাবশ্যক। এ ছাড়াও সহজে পঁচনযোগ্য চর্বি এবং অনেক এ্যামাইনো এসিড বিদ্যমান। প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য কৈ মাছে প্রোটিন- ১৪.৮০ গ্রাম, স্নেহ-৮.৮০গ্রাম, আয়রণ-১.৩৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ০.৪২ গ্রাম, ফসফরাস – ০.৩৯ গ্রাম এবং ভিটামিন রয়েছে- ৩২.০০ গ্রাম।
 
তথ্যসূত্র: DoF

Answer for কৈ, শিং ও মাগুর মাছের পুষ্টিমান কেমন?