ফরমালিনের অপব্যবহার কিভাবে এবং কোন পর্যায়ে হচ্ছেঃ

  • ফরমালিনের অপব্যবহারঃ
    ফরমালিনের অপব্যবহার নিয়ে বর্তমানে জনমনে এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে ফল-ফলাদি, মাছ,তরকারী যা কিছুই ক্রয় করতে যাওয়া হোক না কেন প্রথমেই মনে হয় এটা কি ফরমালিন মুক্ত নাকি ফরমালিন যুক্ত। খাবার টেবিলে মানব মনে পীড়াদেয় ফরমালিন আতংক।

    ফরমালিনের সৃষ্টিতো মানুষের উপকারের জন্য যেমন-ঔষধ, এনিটবায়োটিক, ডিটারজেন্ট তৈরি, গবেষণাগারে পঁচনশীল নমুনা সংরক্ষণ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কাজের জন্য। কিন্তু মাছ, ফল, দুধ ইত্যাদি খাদ্যের পঁচন রোধে ব্যবহারের জন্য নয়।

  • কোথায় কোথায় মাছে ফরমালিন মিশানো হয়ঃ
    আমাদের দেশে রুই-কাতলা জাতীয় মাছ মূলতঃ পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারসহ ভারত থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। আমদানিকারকদের কাছ থেকে জানা যায় যে মিয়ানমারে মাছ ধরা থেকে শুরু করে বাংলাদেশে বাজারজাত করতে ৪/৫ দিন সময় প্রয়োজন। আমদানীকারকদের ধারণা বিদেশে মাছে কোন ফরমালিন ব্যবহার করা হয় না। দেশের অভ্যন্তরে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী মাছে ফরমালিন ব্যবহার করে থাকে। এ প্রেক্ষিতে মিয়ানমার থেকে আমদানীকৃত রুই জাতীয় মাছের পরিবহন নৌকা/ট্রলার এবং বিভিন্ন অবতরণ কেন্দ্র হতে সংগৃহীত মাছে ফরমালিনের উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাকালে দেখা যায় যে, পরিবহন নৌকা/ট্রলারে মাছের স্তুপের বিভিন্ন স্তরে এমনভাবে বরফ কুচি ব্যবহার করা হয় যাতে করে ৩/৪দিনে মাছে কোনরূপ পঁচন সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। টেকনাফস্থ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে সংগৃহীত মাছেও ফরমালিনের উপস্থিতি তেমনটা পাওয়া যায় নাই। অথচ দেশে বাজার থেকে সংগৃহীত আমদানীকৃত মাছে ফরমালিনের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। জানা যায়, আমদানীকৃত রুই মাছে আমাদের দেশের অভ্যন্তরে ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। আমদানীকালে মিয়ানমারে কোনরূপ ফরমালিন ব্যবহার করা হয় না। বিদেশী কোন কাতলা মাছে ফরমালিন পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম এলাকা থেকে যে সকল ছোট/কাচকি মাছ অন্যত্র বিক্রয় করা হয় সেসব মাছে মূলতঃ ফরমালিন পাওয়া গেছে। এতে প্রতীয়মান হয়, দেশে বাজারজাত করার সময়ই বিভিন্ন মাছের ঘাটে, আড়তে, হিমাগারে, অবতরণকেন্দ্রে ও বাজারে অসাধু ও লোভী ব্যবসায়ীরা মাছে ফরমালিন ব্যবহার করে থাকে।
  • অসাধু ব্যবসায়ীরা কিভাবে মাছে ফরমালিন ব্যবহার করে?
    দেশের বিভিন্ন বাজারের মাছ বিক্রেতাদের কাছ থেকে জানা যায় যে, মাছকে সতেজ রাখার জন্য ড্রাম কিংবা বালতিতে পানির সাথে ফরমালিন মিশ্রিত করে মাছকে অল্পক্ষণ চুবিয়ে রাখা হয় কিংবা কোন কোন ক্ষেত্রে ইনজেকশন সিরিঞ্জ দিয়ে মাছের পেটে অর্থাৎ নাড়িভূড়িতে ফরমালিন ঢুকানো হয়। আরও জানা যায় যে, মাছ সংরক্ষণের জন্য ফরমালিন মিশানো হয় বরফ পানিতে।
  • ফরমালিন বিষাক্ত জেনেও কেন মানুষ এটি ব্যবহার করে?
    বিভিন্ন জৈব পদার্থ সংরক্ষণে সাধারনত: ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় মাছকে বাজারে দীর্ঘক্ষণ সতেজ/টাটকা রাখার উদ্দেশ্যে মানুষের জন্য ক্ষতিকর ফরমালিন ব্যবহার করে থাকে।

 
তথ্যসূত্র: DoF

Answer for ফরমালিন অপব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ কি কি?