QuestionsCategory: Fisheries Managementঅক্সিজেন সমস্যা ও মাছ বৃদ্ধি সমস্যা
Anonymous asked 10 years ago

মেইলের শুরুতে আমার সালাম নিবেন। জনাব, আমার নিম্নোক্ত দুইটি সমস্যার সমধান দিয়ে বাধিত করবেন।
১। আমি একটি ৯ শতক জমিতে কিছু মাছের পোনা ফেলি। পোনার ছাড়ার কয়েকদিন পর আমি প্রাই ৪ বালতি গোবর ছিডি। গোবর ছিডার পর দিন থেকে রোদ দিলে পানির উপর একরকম সবুজ বর্ণেরর আস্তর বস্তে থাকে যাহা ক্রমান্ব্য় ঘন হত থাকে। এর নিছে মাছ গুলো একরকম ঝগড়া করার মত ছোটা ছোটি করতে থাকে। আমার মনে হয় অক্সিজেন সমস্যা। আস্তরটা পরিষ্কার করার পর একদিন মাছ আগের মত ছোটা ছোটি করেনি। এবং একদিন পর আস্তর টা আবার জমতে থাকে।
কিভাবে এই সবুজ আস্তর টা দূর করা যায়?
 
২। মাছ তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি হওয়ার কোনো ভিটামিন আছে? যাহা প্রয়োগ করলে মাছ দ্রুত বৃদ্ধি হয়।

অক্সিজেন সমস্যা ও মাছ বৃদ্ধি সমস্যা
3 Answers
Anonymous answered 10 years ago

যতদিন পুকুরে সবুজ বর্ণের আস্তরণ পড়ছে তত দিন গোবর বা অন্য কোন সার দেয়ার প্রয়োজন নেই।
অক্সিজেন বাড়াতে পানিকে আলোড়নের ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন – সাঁতার কাটা, বাঁশ দিয়ে পেটানো, পাম্প মেশিনের সাহায্য পুকুরের পানি পাম্প করে আবার পুকুরেই ফেলা ইত্যাদির মাধ্যমে অক্সিজেন বাড়ানো যায়। আবার অক্সিজেন বাড়ানোর জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরণের ক্যমিকেল পাওয়া যায় যা দ্রুত কাজ করে। সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।
বাজারে অনেক ধরণের ভিটামিন পাওয়া যায়, ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

Answer for অক্সিজেন সমস্যা ও মাছ বৃদ্ধি সমস্যা
Anonymous answered 10 years ago

পুকুরে আগাছা থাকলে তুলে ফেলুন। গোবরসহ সকল সার প্রয়োগ আপাতত বন্ধ রাখুন। পানি যোগ করা সম্ভব হলে পুকুরে পানি যোগ করুন।

Answer for অক্সিজেন সমস্যা ও মাছ বৃদ্ধি সমস্যা
Anonymous answered 10 years ago

অক্সিজেন জীবনের জন্য অপরিহার্য। প্রয়োজনীয় পরিমাণ অক্সিজেন ছাড়া কোন প্রাণীর স্বাভাবিক বৃদ্ধি সম্ভব নয়। সে কারণে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন মাছ ও চিংড়ি চাষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে চিংড়ির অক্সিজেন চাহিদা কার্পের চেয়ে বেশি। কৈ, শিং মাগুর মাছের অক্সিজেন চাহিদা তুলনামূলক কম।
উদ্ভিদ-প্ল্যাংঙ্কটন ও জলজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় যে অক্সিজেন প্রস্ত্তুত করে তা পানিতে দ্রবীভূত হয়। বাতাস থেকে কিছু পরিমাণ অক্সিজেন সরাসরি পানিতে মিশে। পুকুরের মাছ, জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী এ অক্সিজেন দ্বারা শ্বাসকার্য চালায়। রাতে সূর্যালোকের অভাবে পানিতে কোন অক্সিজেন প্রস্ত্তুত হয় না। পুকুরের তলায় জৈব পদার্থ পচনেও অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়। এজন্য সকালে পুকুরের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ খুব কমে যায়, বিকেলে অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে। পানিতে ২.০ মি.গ্রা/লিটারের কম অক্সিজেন থাকলে রুইজাতীয় মাছ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে না। পুকুরের পানিতে ৫-৮ মি.গ্রা/লিটার হারে দ্রবীভূত অক্সিজেন থাকলে মাছ কাঙ্ক্ষিত হারে বৃদ্ধি পায়।
তাপমাত্রার সাথে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রার ব্যস্তানুপাতিক (inversely proportional) সম্পর্ক রয়েছে। তাপমাত্রা বাড়লে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা কমে এবং তাপমাত্রা কমলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। নিচের সারণিতে বিভিন্ন তাপমাত্রায় পানিতে অক্সিজেনের দ্রবণীয়তা দেখানো হলো :
পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের উৎস দু’টি-

  • পানি সংলগ্ন বাতাস;
  • সবুজ শেওলা ও ডুবন্ত জলজ-জীবের সালোকসংশ্লেষণ।

দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা পানির নিম্নোক্ত গুণাবলীর ওপর নির্ভর করে।

  1. তাপমাত্রা;
  2. লবণাক্ততা এবং
  3. বায়ুমন্ডলের চাপ।

তাপমাত্রার সাথে অক্সিজেন দ্রবণীয়তার সম্পর্ক
তাপমাত্রা (ডি. সে.) : অক্সিজেনের দ্রবণীয়তা (মিগ্রা/লিটার)
১৬                                : ৯.৮৬
১৮                                : ৯.৪৫
২০                                : ৯.০৮
২২                                 : ৮.৭৩
২৪                                 : ৮.৪০
২৬                                 : ৮.০৯
২৮                                 : ৭.৮১
৩০                                 : ৭.৫৪

বিভিন্ন কারণে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন কমে যাওয়ার প্রধান কারণগুলো নিম্নরূপঃ
পানিতে অক্সিজেন হ্রাসের কারণ

  • পানিতে বসবাসকারী জলজ জীবের শ্বাস-প্রশ্বাস;
  • পুকুরের তলায় বিদ্যমান জৈব পদার্থের পচন;
  • তলায় অবস্থিত গ্যাসের বুদবুদের সাথে বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন চলে যাওয়া;
  • ক্ষতিকর ব্লুম সৃষ্টি;
  • মাটিতে লৌহের পরিমাণ বেশি থাকা;
  • পানিতে গাছের পাতা ও ডালপালা পড়া;
  • কাঁচা গোবর বেশি পরিমাণে ব্যবহার;
  • আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকা;
  • পানি খুব ঘোলা হওয়া।

মাছ চাষে অক্সিজেনের প্রভাব
মাছ ও চিংড়ি চাষের জন্য দ্রবীভূত অক্সিজেনের সর্বোত্তম মাত্রা হচ্ছে ৫-৮ মিগ্রা/লিটার। পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম হলে মাছ ও চিংড়ির বৃদ্ধি, খাদ্যের পরিবর্তন হার ও ডিমের সংখ্যাও কমে যায়। অক্সিজেন খাদ্যদ্রব্য হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পানিতে পরিমিত মাত্রায় অক্সিজেন থাকলে খাদ্যের পরিবর্তন হার বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণ খাদ্যে অধিক পরিমাণ মাছ উৎপাদন হয়। পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা বাড়লে মাছের খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং অক্সিজেনের মাত্রা কমলে খাদ্য চাহিদা হ্রাস পায়। এছাড়াও শ্বাসকষ্টজনিত কারণে ব্যাপকভাবে মাছ ও চিংড়ি মারা যেতে পারে। পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ সহনশীল মাত্রার নিচে নেমে গেলে নিম্নরূপ লক্ষণগুলো পরিলক্ষিত হয়ে থাকে –

  • মাছ পানির উপর ভেসে উঠে ও খাবি খায়;
  • চিংড়ি পুকুর পাড়ের কাছে চলে আসে;
  • মাছ ও চিংড়ি ক্লান্তিহীনভাবে পানিতে ঘোরাফেরা করতে থাকে।

পানির রং অতিরিক্ত সবুজ হলে, তলায় খুব বেশি জৈব পদার্থ থাকলে, অধিক ঘনত্বে মাছ-চিংড়ি মজুদ করা হলে, বা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণ সার ও খাদ্য প্রয়োগ করা হলে উপরোক্ত অবস্থার সৃষ্টি হওয়ার আশংকা থাকে। সাধারণতঃ মধ্যরাত থেকে ভোরের দিকে বা মেঘলা দিনে পুকুরে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়। পুকুরে অক্সিজেন পরিমাপ করার সময় তলদেশের পানিতে কী পরিমাণ অক্সিজেন দ্রবীভূত আছে তা বিবেচনায় আনতে হবে।
সাময়িক অক্সিজেন ঘাটতি মোকাবেলার উপায়

  • পানির উপরিভাগে ঢেউ সৃষ্টি করে বা পানি আন্দোলিত করে ;
  • সাঁতার কেটে বা বাঁশ পিটিয়ে বা হাত দিয়ে পানি ছিটিয়ে;
  • পাম্প দিয়ে নতুন পানি সরবরাহ করে।

তথ্যসূত্র: DoF

Answer for অক্সিজেন সমস্যা ও মাছ বৃদ্ধি সমস্যা