পুকুরের পানির তাপমাত্রার সাথে মাছের বৃদ্ধির যেমন সম্পর্ক রয়েছে তেমনই রয়েছে মাছের খাদ্যের চাহিদার সম্পর্ক। বিস্তারিত নিচের টেবিলে দেয়া হল।
মাছের প্রজাতি | তাপমাত্রা (ডি.সে.) |
খাদ্য চাহিদা | মাছের বৃদ্ধি | মন্তব্য |
কাতলা, রুই, মৃগেল |
৩০-৩৫ | সবচেয়ে বেশি | সর্বোচ্চ | অনুকূল তাপমাত্রা |
২০ | অপেক্ষাকৃত কম | মোটামুটি | – | |
<১০ | শুন্য | বন্ধ | খাওয়া বন্ধ করে দেয় | |
সিলভার কার্প | ৩০ | সবচেয়ে বেশি | সর্বোচ্চ | অনুকূল তাপমাত্রা |
২০ | অপেক্ষাকৃত কম | কিছু কম | – | |
১৫ | ন্যূনতম | খুব কম | – | |
বিগহেড কার্প | ৩০ | সবচেয়ে বেশি | সর্বোচ্চ | অনুকূল তাপমাত্রা |
২০-২৫ | অপেক্ষাকৃত কম | কম | – | |
১৫ | ন্যূনতম | খুব কম | – | |
গ্রাস কার্প | >৩৮ | কম | কম | মারা যায় |
৩৫ | সবচেয়ে বেশি | সর্বোচ্চ | অনুকূল তাপমাত্রা | |
২০-৩০ | অপেক্ষকৃত কম | বন্ধ | – | |
<১০ | শুন্য | কম | খাওয়া বন্ধ করে দেয় | |
তেলাপিয়া | >৪০ | শুন্য | সর্বোচ্চ | অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে |
৩০-৩৫ | সবচেয়ে বেশি | অপেক্ষাকৃত কম | অনুকূল তাপমাত্রা | |
১৫-১৬ | শুন্য | বন্ধ | খাওয়া বন্ধ করে দেয় |
তথ্যসূত্র: DoF
মাছ শীতল রক্তবিশিষ্ট জলজ প্রাণী। মাছের শরীরের তাপমাত্রা পানির তাপমাত্রার সাথে উঠানামা করে। তাই মাছের বৃদ্ধি হার তাপমাত্রার সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। গ্রহণযোগ্য সীমার (Optimum) মধ্যে তাপমাত্রা বাড়লে মাছের খাদ্য গ্রহণের প্রবণতাও বেড়ে যায়। যথাযথ তাপমাত্রায় অধিক খাদ্য গ্রহণের সাথে সাথে হজম ক্রিয়া ও নিঃসরণে কম সময় লাগে। ফলে অধিক পরিমাণে শক্তি উৎপন্ন হয়, কিন্তু ব্যয় হয় কম পরিমাণ। ফলে মাছের বৃদ্ধি দ্রুততর হয়। তবে তাপমাত্রা অত্যধিক বেড়ে গেলে পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে। এতে মাছের খাদ্য গ্রহণের হার হ্রাস পায় এবং মাছ মারা যেতে পারে। আবার তাপমাত্রা কমে গেলে মাছের খাদ্য গ্রহণের হার কমে যায়। এজন্য শীতকালে পুকুরে সার ও খাদ্যের পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিতে হয়। তাপমাত্রা খুব বেশি কমে গেলে মাছ খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অগভীর (<১.১৫মি.) ছোট পুকুরে (<১০শতাংশ) তাপমাত্রা খুব দ্রুত উঠানামা করে থাকে।
রুইজাতীয় মাছ চাষের জন্য অনুকূল তাপমাত্রা ২৫-৩০ ডি. সে.। কোন কারণে পুকুরে পানির তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বাইরে থেকে পরিস্কার ঠান্ডা পানি সরবরাহ করা যেতে পারে। টোপাপানা দ্বারাও পুকুরের পানির ১০ ভাগ আয়তনে সাময়িকভাবে ছায়ার ব্যবস্থা করে বেশি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: DoF